প্রেমের ফাঁদে ফেলে ফতুল্লা থেকে নিয়ে যাওয়া কিশোরী কে ভারতে পাচারের সময় ঝিনাইদাহের বর্ডার এলাকা থেকে কিশোরী কে উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় পাচারের উদ্দেশ্য নিয়ে যাওয়া হাসান ও শামিম ওরফে রাকিব নামক দুই পাচার কারীকে আটক করে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের নিকট সোপর্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

সোমবার ৮ আগস্ট দুপুরে ঝিনাইদাহ জেলার মহেশপুর থানার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে তরুনী কে উদ্ধার সহ আটক করা হয় দুই মানবপাচারকারীকে।পরবর্তীতে বিষয়টি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ কে জানালে পুলিশ মঙ্গলবার(৯ আগস্ট) রাতে উদ্ধার হওয়া কিশোরী সহ আটককৃত দুই মানবপাচারকারীকে গ্রেফতার করে ফতুলা থানায় নিয়ে আসে।

এর আগে ৭ আগস্ট রাতে কিশোরীর বাবা সোহেল বাদী হয়ে কিশোরী নিখোঁজের সাধারন ডায়েরী (নং-৫৩৫) করেন।

গ্রেফতারকৃত দুই পাচারকারী হলো মুন্সিগঞ্জ জেলার সদর থানার ভীটু হোগলা কান্দির মোক্তার হোসেনের পু্ত্র হাসান (১৮) ও চানপুর জেলার ফরিদগঞ্জ থানার গোয়ালঘরের শাহজাহানের পুত্র শামিম ওরফে রাকিব(১৮)। তারা উভয়েই উদ্ধার হওয়া কিশোরীর প্রেমিক রনির সহোযোগি বা বন্ধু।
উদ্ধার হওয়া কিশোরীর বয়স ১৫। সে দক্ষিণ সস্তাপুর এলকার এবং সস্তাপুরস্থ এবলুম গার্মেন্টসে চাকুরি করতো।

উদ্ধার হওয়া কিশোরী জানায়, সে গত এক বছর ধরে এবলুম গার্মেন্টসে চাকুরী করে আসছে। অপরদিকে রনি ছয় মাস পূর্বে চাকুরীতে যোগদান করে এবং সস্তাপুর এলাকায় ভাড়ায় বসবাস করে। উভয়ে একই গার্মেন্টেসে চাকুরী করার সুবাদে রনির সাথে পাঁচ মাস পূর্বে কিশোরীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। সেই সম্পর্কের সূত্র ধরে রনির শলারামর্শে তারা পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করে। সিদ্ধান্ত নেয় গার্মেন্টস থেকে বেতন পেয়ে তারা পালিয়ে যাবে। রনি তখন কিশোরী কে জানায় তার বন্ধু হাসান তাকে গার্মেন্টসের সামনে থেকে নিয়ে যাবে। সে মোতাবেক ৭ আগস্ট রাতে বেতন পেয়ে কিশোরী গার্মেন্টস থেকে বের হয়ে হাসানের সাথে রিক্সায় করে রনির নিকট যাওয়ার জন্য রওনা দেয়। অতপর রিক্সা ছেড়ে সি,এন,জি নেয়। পথিমধ্যে তাদের সাথে যোগ দেয় শামিম ওরফে রাকিব নামক হাসানের পরিচিত এক সহোযোগি। তারা তখন বাসে চড়ে চলে যায় সীমান্তবর্তী এলাকায়।সেখানে তারা দুপুর দুইটার দিকে বিজিবির হাতে আটক হয়। আটক হওয়ার পূর্ব মুহুর্ত পর্যন্ত সে বুজতে পারেনি তাকে প্রতারনার ফাঁদে ফেলে প্রেমের অভিনয় প্রেমিক রনি মানব পাচারকারী চক্রের হাতে তুলে দিয়েছে।

সাধারন ডায়েরীর কর্মকর্তা ফতুল্লা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক আনেয়ার হোসেন মোল্লা জানায়, কিশোরী মেয়েটি কথিত প্রেমিক রনির কথায় বিশ্বাস করে ৭ আগস্ট গার্মেন্টস থেকে বের হয়ে পূর্ব পরিকল্পনানুযায়ী হাসানের সাথে দেখা করে। হাসান তখন নিয়ে যায় শামিম ওরফে রাকিবের নিকট। সেখান থেকে তারা বাসে করে জমাইদাহ বর্ডার এলাকায়। তাদের গতিবিধি সন্দেহ হলে ৮ আগস্ট তাদের কে আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। পরে থানা পুলিশ কে জানালে তারা কিশোরী সহ পাচারাকারী হাসান ও শামিম ওরফে রাকিব কে মঙ্গলবার দিবাগত রাত একটার দিকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে। কিশোরীর কথিত প্রেমিক মূল হোতা রনি কে গ্রেফতারের চেস্টা করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
ফতুল্লা মডেল থানার ইনচার্জ শেখ রিজাউল হক দিপু জানায়, মেয়েটি কে পাচারের উদ্দশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো। পরে সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সহায়তায় মেয়েটিকে উদ্ধার সহ পাচারকারী চক্রের দুই সদস্য কে গ্রেফতার করা হয়েছে।